গত কয়েকদিনের তুলনায় রাজধানীর সড়কগুলোয় বেড়েছে যান চলাচল। কিছু মূল সড়কে গাড়ির চাপও দেখা গেছে। আবার কোথাও কোথাও থেমে থেমে যানবাহনের জটলাও দেখা গেছে। তবে সড়কে নেই কোনো ট্রাফিক পুলিশ। সরেজমিনে আজ বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় রাজধানীর প্রবেশপথসহ সিগনালগুলোয় বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাই সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করছেন। রীতিমতো ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করছেন তারা।
এদিকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সড়কের শৃঙ্খলা বজায় রাখতেও কাজ করছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। কোনো মোটরসাইকেলে তিনজন দেখলেই থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। এমনকি হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালকদেরও থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে সড়ক পারাপারের ক্ষেত্রে পথচারীদের ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতেও অনুরোধ জানাতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
এর আগে বুধবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর প্রগতি সরণি এলাকা ছাড়াও কারওয়ান বাজার, ডেমরা, মোহাম্মদপুর, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে শিক্ষার্থীদের তৎপরতা দেখা গেছে। এর পাশাপাশি সড়ক পরিচ্ছন্নতার কাজও করছে দেখা গেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের।
এদিকে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) থেকে সারাদেশে সড়ক ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন গণপরিবহন মালিকেরা। সবশেষ বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজধানীর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা থেকে স্বল্প বা দীর্ঘ দূরত্বের পথে পরিবহনের পাশাপাশি যাত্রী সংখ্যাও বাড়ছে। উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতা ও প্রাণহানি ঠেকাতে গত ১৯ জুলাই রাত ১২টা থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি হয়, মাঠে নামে সেনাবাহিনী। এরপর দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে শিথিল থাকলেও কারফিউ চলমান থাকে। সেই সঙ্গে সড়কেও যানবাহনের উপস্থিতি কমে যায়।
সবশেষ আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি ঘিরে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ-আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে সরকারপ্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। পরে সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি। এরপর সেনাবাহিনী প্রধান দায়িত্ব নিয়ে রাষ্ট্রপতিসহ সব দলের সঙ্গে আলোচনার পর দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে শপথ নেয়ার কথা রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে এ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।